বইকিতাব.কম

বইকিতাব.কম

বাংলাদেশে প্রচলিত পশু বর্গাদান পদ্ধতির শরয়ী জায়েজ সূরত কী?



বাংলাদেশে প্রচলিত পশু বর্গাদান পদ্ধতির শরয়ী জায়েজ সূরত কী? প্রশ্ন প্রিয় মুফতি সাহেব, আসসালামু আলাইকুম নিচে আপনার উত্তর এর সাপেক্ষে বলতে চাই, উত্তর আরো বিস্তারিত দিলে উম্মত উপকৃত হবে ইনশাআল্লাহ। প্রশ্নঃ গরু/ছাগল/মহিষ বর্গা দিয়ে ১) উক্ত গরু/ছাগল/মহিষ বা তাদের বংশধর বাজারে বিক্রি করে যে দাম পাওয়া যাবে এর অর্ধেক লালন পালনকারী এবং অর্ধেক পশুটির মালিক পাবে । ২) প্রথম বাচ্চা  লালন পালনকারী পাবে আর মূল পশু মালিকের রয়ে যাবে, আবার দ্বিতীয় বাচ্চা মালিক পাবে, তৃতীয় বাচ্চা লালন পালনকারী পাবে, চলবে………. এ দুটি পদ্ধতিতে চুক্তি করে উপকৃত হওয়া কি শরিয়ত পরিপন্থি কিনা? পরিস্কার কোন সহিহ বা যইয়িফ হাদীস এ বিষয়ে আছে কিনা? খাইরুল কুরুন এর যুগে এরকম কোন নিয়ম চলু ছিল কিনা? জায়েয হলে কেন জায়েজ এবং নাজায়েয হলে কেন নাজায়েয তা দয়াকরে বিস্তারিত লিখুন। আমার মতে, এতে সুদের কোন কারবার নেই, দু পক্ষই সুবিধা পাচ্ছে। হাজারো গরিব যাদের কোন সম্বল নাই, মালওয়ালার গরু দিয়ে তারা উপকৃত হচ্ছে। আর মালওয়ালা তার মাল ব্যংক এ রেখে সুদ খাওয়া থেকে বিরত থাকছে। আমার আকলে তো বলে খুব সুন্দর একটা ব্যবস্থা যেখানে গরিব এন.জি.ও/ব্যংক থেকে সুদে টাকা নেওয়া থেকে বিরত থাকছে এবং মালওয়ালা ব্যংক এ টাকা না রেখে সুদ খাওয়া থেকে বিরত থাকছে এবং দু পক্ষই উপকৃত হচ্ছে । তবে আমি ২  নং পদ্ধতির ঘোর বিরোধি কারন এ পদ্ধতি তে এক পক্ষের লোকশানের অশংকা অনেক বেশি যদি তার জন্য নির্ধারিত পশুটি মারা যায়। তবে বাজারে বিক্রি করে যে দাম পাওয়া যাবে এর অর্ধেক লালন পালনকারী এবং অর্ধেক পশুটির/পশুগুলির মালিক পাবে আর যদি মারা যায় তাহলে দুপক্ষ ই সমান ক্ষতিগ্রস্ত হবে” – এই পদ্ধতিটি অনেক বেশি ইনসাফ ভিত্তিক। আমার আকল থেকে শরিয়ত আমার কাছে বেশি প্রাধান্যযোগ্য। দয়াকরে শরিয়ত ভিত্তিক বিস্তারিত বলুন। জাজাকাল্লাহু খাইরন Regards, Muhammad Imtiaz Hossain Web Programmer & IR Officer Office of International Cooperation (OIC) King Fahd University of Petroleum & Minerals P.O. Box 1086, Dhahran 31261, KSA   উত্তর وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته بسم الله الرحمن الرحيم উভয়ের উপকার হলেই কোন বস্তু জায়েজ হয়ে যায় না। সুদী কারবারের মাঝেও উভয় চুক্তিকারীর উপকার থাকে। তথা সুদদাতার কাজ হাসিল হয়, অপরদিকে সুদ গ্রহীতার অর্থ হাসিল হয়। এজন্য কি সুদী লেনদেন জায়েজ হয়ে যাবে? তাই উপকৃত হবার আপনার এ থিউরী সকল স্থানে প্রয়োগযোগ্য নয়। ১ম সূরতের জায়েজ পদ্ধতি যে পশুটি বর্গা দিতে চাচ্ছে, একটি নামমাত্র দাম ধরে যার কাছে বর্গা দিতে চাচ্ছে তার কাছে বিক্রি করে দিবে। আর যে টাকাটি বিক্রি হিসেবে মালিক পেল তা এক বা দুই বছর নির্ধারিত করে লালন পালনের মুজুরী হিসেবে পশু গ্রহিতাকে প্রদান করবে। এখন উভয়ে উক্ত পশুটির অর্ধেক অর্ধেক মালিক। সে হিসেবে পশুটির বাচ্চা ও দুধ ইত্যাদি সমান সমান ভোগ করতে পারবে। শরয়ী কোন সমস্যা এতে নেই। ২য় সূরতের জায়েজ পদ্ধতি যার কাছে বর্গা দিতে চাচ্ছে তার সাথে এভাবে চুক্তি করবে যে, তুমি এক বছর আমার পশুটি লালন পালন কর, আমি তোমাকে কথার কথা একশত টাকা দিব। তারপর এক বছর পর যদি মালিক বাছুর নিতে চায়, তাহলে একশত টাকা পরিশোধ করে বাছুর নিয়ে নিবে। আর যদি লালনপালনকারী বাছুর নিতে চায়, তাহলে একশত টাকা নেবার বদলে বাছুরটি নিয়ে নিবে উভয়ের সন্তুষ্টিতে। এভাবে চলতে থাকলে এতে কোন শরয়ী বিধিনিষেধ নেই। তবে হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ বলেছেন-এ পদ্ধতিটি হাম্বলী মাযহাবে জায়েজ। তাই কোন এলাকায় যদি এটি ব্যাপক প্রচলন হয়, আর এ ছাড়া আর কোন পদ্ধতি সহজ না হয়, তাহলে উক্ত পদ্ধতিটি হাম্বলী মাযহাব অনুযায়ী আমাদের মাযহাবেও জায়েজ হিসেবে করা যাবে। {ইমদাদুল ফাতওয়া-৩/৩৪২-৩৪৩}
فى مجموعة فتاوى ابن تيمة-لو دفع دابته أو نخله إلى من يقوم به وله جزء من ثمانية صح. وهو رواية عن أحمد عن اختيارات 145، 146 ف 2/ 220، (مجموعة فتاوى ابن تيمة، كتاب البيع، باب الشركة والله اعلم بالصواب 

উত্তর লিখনে লুৎফুর রহমান ফরায়েজী পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা। উস্তাজুল ইফতাজামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা। ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com @কপিরাইট: http://ahlehaqmedia.com

No comments

Powered by Blogger.